রবিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২২, ০৩:৪০ অপরাহ্ন
অনলাইন ডেস্কঃ পদ্মাসেতুর ওপর যাত্রার মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ১৫ বছরের ঝুঁকি ও কষ্টের অবসান ঘটল শরীয়তপুরের যাত্রীদের। পদ্মাসেতু দিয়ে এ যাত্রা হবে স্বস্তির ও আনন্দের। রোববার সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে শরীয়তপুর কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড থেকে স্বস্তির যাত্রা শুরু করল ১৫ চেয়ার কোচ।
প্রতিটি বাসের যাত্রী ধারণ ক্ষমতা ৪২ জন। পদ্মাসেতু দিয়ে প্রথম যাত্রার সঙ্গী হতে দুই সহস্রাধিক যাত্রী সমাগম হলেও স্বপ্ন যাত্রার সঙ্গী হতে পেরেছেন মাত্র ৬৩০ জন। বাকিদেরকে প্রতিক্ষা করতে হবে আগামী দিনের।
যাত্রীরা বলছেন, পদ্মাসেতুর ওপর দিয়ে শরীয়তপুর থেকে প্রথম দিনের যাত্রী হতে পারাটা ইতিহাসের ও গৌরবের। শরীয়তপুর সুপার সার্ভিস প্রাইভেট কোম্পানি, শরীয়তপুর পদ্মা ট্রাভেলস, শরীয়তপুর পরিবহন ও গ্লোরি এক্সপ্রেস নামে প্রস্তুত হচ্ছে বিলাসবহুল বাস।
এর আগে সকাল সাড়ে ৮টায় শরীয়তপুর কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ডে শরীয়তপুর পৌরসভার মেয়র পারভেজ রহমান জন প্রধান অতিথি হিসেবে ফিতা কেটে নব যাত্রার শুভ উদ্বোধন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- শরীয়তপুর পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি ফারুক আহমেদ তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক মো. বাচ্চু বেপারী, শরীয়তপুর আন্তঃজেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ফারুক আহমেদ চৌকিদার, সহ-সভাপতি মো. জালাল মাঝিসহ অন্যান্য মালিক ও শ্রমিক নেতারা।
শরীয়তপুর পৌরসভার পশ্চিম কোটাপাড়া গ্রামের আলী আহমেদ খান বলেন, দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর পদ্মাসেতুর ওপর দিয়ে আরামদায়ক গাড়িতে চড়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে নিরাপদ যাত্রা ছিল আমাদের জন্য স্বপ্নের মতো। আমি প্রথম বাসের যাত্রী হতে পেরে আনন্দে আত্মহারা। এ যে কী আনন্দের তা বলে বোঝানো যাবে না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারণেই আমাদের শরীয়তপুরবাসীর এ নিরাপদ যাত্রা শুরু হলো। প্রধানমন্ত্রীকে শরীয়তপুরবাসীর পক্ষ থেকে অনেক অভিনন্দন, শুভেচ্ছা ও অফুরন্ত দোয়া।
শরীয়তপুর পৌরসভার উত্তর পালং গ্রামের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী তারা মোল্লা (৫২) বলেন, গতকাল পর্যন্ত আমাদের ঢাকা যাওয়া ছিল ঝুঁকিপূর্ণ ও কষ্টদায়ক ভ্রমণ। কিন্তু তা এখন কেবলই স্মৃতি। পদ্মাসেতু দিয়ে ঢাকায় যাওয়া এখন স্বপ্ন ভ্রমণ। আমরা বিগত প্রায় ৩৫ বছরের কষ্টের যাত্রা ভুলে গেছি নিমিষে।
শরীয়তপুর থেকে ঢাকাগামী প্রথম বাসের চালক দেলোয়ার হোসেন (৪৫) বলেন, শরীয়তপুর থেকে ঢাকা যাচ্ছি বাস চালিয়ে। আমার বাসে ৪২ জন যাত্রী। আজ আমি বাস নিয়ে পদ্মাসেতু পার হবো এটা গৌরবের মনে হচ্ছে। আমার বয়সে এমন আনন্দ আর লাগেনি।
শরীয়তপুর আন্তঃজেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ফারুক আহমেদ চৌকিদার বলেন, বিগত প্রায় ১৫ বছরেরও বেশি সময় থেকে ১ হাজার ৫০০ এরও বেশি শ্রমিক অতিকষ্টে জীবনযাপন করতেন। সংকটের কারণে অনেকেই এই পেশা ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন অন্য পেশায়। আজ পদ্মাসেতুর হাত ধরে সেই শ্রমিক ভাইয়েরা ফিরে পাবে নতুন জীবন। পাল্টে যাবে তাদের জীবনযাত্রার মান। এ মহান কীর্তির অগ্রনায়ক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শরীয়তপুরের সব পরিবহন শ্রমিকের পক্ষ থেকে আন্তরিক অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা।
শরীয়তপুর পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি ফারুক আহমেদ তালুকদার বলেন, দীর্ঘ ৩৫ বছরের ভগ্নদশায় থাকা শরীয়তপুরের পরিবহন খাত আজ পদ্মাসেতুর বদৌলতে পুনর্জন্ম পেল। এ স্বস্তি ছড়িয়ে পড়েছে জেলার প্রতিটি যাত্রী, চালক ও পরিবহন শ্রমিকের মাঝে। পদ্মাসেতু আমাদের শরীয়তপুর পরিবহন খাতের জন্য এক সম্ভাবনাময় সোনালী সূর্য। আজ ১৫টি বাসের যাত্রার মধ্যদিয়ে শুরু হলো আমাদের শরীয়তপুরের পরিবহন পরিবারের নতুন পথচলা।
এজেড এন বিডি ২৪/ রেজা
Leave a Reply