সোমবার, ০৮ অগাস্ট ২০২২, ০৩:৫৫ অপরাহ্ন
অনলাইন ডেস্কঃ চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত ইব্রাহীম হোসেনের নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মুন্নী খাতুন জীবন সঙ্গীকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ। ইব্রাহীম তার মাকে মুঠোফোনে জানিয়েছিলেন- এবারের ইদে বাড়ি ফিরে নিজের সন্তানের মুখ দেখবেন। পুত্র সন্তান হলে মাদরাসায় পড়াবে, আর হাফেজ বানাবে। কিন্তু অগ্নিকাণ্ডে ইব্রাহীমের সেই স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল।
সোমবার (৬ জুন) ভোর সাড়ে ৪টায় লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে করে ইব্রাহিমের দগ্ধ মরদেহ তার বাড়িতে পৌঁছায়। এরপর মা, ভাই-বোনসহ অন্যান্য স্বজনদের গগন বিদারী আর্তনাদে কান্নার রোলে পুরো পরিবেশ থমথমে হয়ে যায়।
এমনই চিত্র যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার জহুরপুর ইউনিয়নের নরসিংহপুর গ্রামে ইব্রাহিমের বাড়িতে। ইব্রাহীম (২৭) যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার জহুরপুর ইউনিয়নের নরসিংহপুর গ্রামের আবুল কাশেম মুন্সীর ছোট ছেলে।
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিস্ফোরণে নিহত ইব্রাহীম হোসেনের বোন সেলিনা আক্তার আহাজারি করে বলছেন, ‘আমার ভাই ভিডিয়ো করতিছিল! ভিডিয়ো করতি করতি কী ছুইটে আইসে আমার ভাইর মাথায় লাইগলো রে…। মা কয়ে চিল্লেন দিয়ে আর কথা কইনি রে…। আমার ভাই কী কইরে ফুরোয়ে গেল রে..। ভাইতো আর আসবে নারে…।’
ইব্রাহীমের খালাতো ভাই শিমুল হোসেন জানান, শনিবার রাতে অনেকের মতো ইব্রাহীম অগ্নিকাণ্ডের ভিডিয়ো ফেসবুকে লাইভ করছিলেন। কিছু সময় পর হঠাৎ ডিপোর কনটেইনারগুলোতে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। তখন থেকে ইব্রাহীমের মুঠোফোন বন্ধ ছিল। এরপর ঘটনাস্থলে গিয়ে খোঁজাখুঁজির পরে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে তার মরদেহের সন্ধান মেলে।
ইব্রাহীমের মা বলেন, শনিবার রাত নয়টায় ইব্রাহীমের সঙ্গে মুঠোফোনে আমাদের শেষ কথা হয়। আমাকে বলেছিল পুত্র সন্তান হলে মাদরাসায় পড়াবে, হাফেজ বানাবে।
জহুরপুর ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মিন্টু জানান, পাঁচ বছর আগে প্রাণ আরএফএল কোম্পানিতে চাকরি পান ইব্রাহিম। বর্তমানে নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা ইব্রাহীমের স্ত্রী। দেড় বছর আগে নিজ গ্রামেই বিয়ে করেন সে। ইব্রাহীমের মৃত্যুর সংবাদ শুনে পুরো গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এজেড এন বিডি ২৪/ রেজা
Leave a Reply